ডায়াবেটিসের প্রাথমিক ৫টি লক্ষণ যা অনেকেই বুঝতে পারেন না
বর্তমান যুগে ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক রোগ হিসেবে পরিচিত। অনেক সময় মানুষ জানতেই পারেন না যে তাদের শরীরে এই রোগটি ধীরে ধীরে বাসা বাঁধছে। প্রাথমিক অবস্থায় কিছু সূক্ষ্ম লক্ষণ দেখা দেয়, যা আমরা সাধারণত উপেক্ষা করি। অথচ সময়মতো সচেতন হলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
চলুন জেনে নিই ডায়াবেটিসের এমন ৫টি প্রাথমিক লক্ষণ, যা অনেকেই বুঝতে পারেন না।
বারবার প্রস্রাবের চাপ অনুভব করা
যদি দেখেন দিনে বা রাতে অস্বাভাবিকভাবে বারবার প্রস্রাবের চাপ আসছে, তবে এটি ডায়াবেটিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হতে পারে। রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ জমে থাকলে কিডনি তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দিতে চেষ্টা করে, ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।
অস্বাভাবিক পিপাসা বা তৃষ্ণা
বারবার পানি খাওয়ার ইচ্ছে বা মুখ শুকিয়ে যাওয়া অনেক সময় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফল। শরীর অতিরিক্ত গ্লুকোজ বের করে দিতে গিয়ে পানিশূন্যতা তৈরি করে, যার কারণে পিপাসা বেড়ে যায়।
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
খাবার ঠিকমতো খাচ্ছেন তবুও হঠাৎ ওজন কমছে? এটি ডায়াবেটিসের লুকানো সংকেত হতে পারে। শরীর যখন ইনসুলিন ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না, তখন শক্তি উৎপাদনের জন্য চর্বি ও পেশি ভাঙতে শুরু করে, যার ফলে ওজন কমে যায়।
অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা অবসাদ
যদি সারাক্ষণ দুর্বল লাগছে, শক্তি পাচ্ছেন না, তাহলে সেটিও ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত হতে পারে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কোষগুলো যথেষ্ট গ্লুকোজ পায় না, ফলে শক্তির ঘাটতি তৈরি হয়।
ক্ষত সারতে দেরি হওয়া ও ত্বকে সংক্রমণ
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের রক্তসঞ্চালন কমে যায় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হয়। ফলে ক্ষত বা কাটা জায়গা দ্রুত সারতে চায় না, ত্বকে ফুসকুড়ি বা সংক্রমণও সহজে দেখা দেয়।
⚠️ কী করবেন?
উপরের লক্ষণগুলো যদি নিয়মিত লক্ষ্য করেন, তাহলে দেরি না করে দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো সচেতনতা ও সঠিক জীবনযাপনই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।
🥦 ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু টিপস
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন
চিনি ও মিষ্টিজাত খাবার এড়িয়ে চলুন
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন
মানসিক চাপ কমান ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
✍️ উপসংহার
ডায়াবেটিস প্রথমে খুব নীরবভাবে শরীরে প্রবেশ করে, তাই প্রাথমিক লক্ষণগুলো বুঝে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একটু সচেতনতা আপনাকে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।