জেনে নিন কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়

আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। এটি শরীরের বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত পানি ছেঁকে দেয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে শরীর নানাভাবে তার সংকেত দেয়—তার মধ্যে অন্যতম হলো ব্যথা।

🔹 কিডনির ব্যথা কেমন হয়?

কিডনির ব্যথা সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং অনেক সময় কোমর বা পিঠের এক পাশ থেকে শুরু হয়ে পেটের নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এটি অনেক সময় পেট ব্যথা বা মাংসপেশির ব্যথার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন অনেকে, যা ভুল নির্ণয়ের কারণ হতে পারে।

🔹 কিডনির সমস্যা হলে শরীরের যেসব স্থানে ব্যথা হতে পারে:
1️⃣ কোমরের দুই পাশে

কিডনির অবস্থান কোমরের ঠিক নিচে, তাই কিডনিতে ইনফেকশন বা পাথর হলে সবচেয়ে বেশি ব্যথা হয় কোমরের দুই পাশে। ব্যথা টান ধরার মতো বা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা অনুভূতি হতে পারে।

2️⃣ পিঠের নিচের অংশে

অনেক সময় কিডনির ব্যথা পিঠের নিচে, বিশেষ করে মেরুদণ্ডের দু’পাশে অনুভূত হয়। এই ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং বসা বা হাঁটার সময় বেশি অনুভূত হয়।

3️⃣ পেটের নিচে বা পাশে

কিডনিতে পাথর থাকলে ব্যথা অনেক সময় পাশ ঘেঁষে পেটের নিচের দিকে চলে আসে। কখনও কখনও এই ব্যথা এত তীব্র হয় যে রোগী স্থির থাকতে পারেন না।

4️⃣ কুঁচকি বা জননাঙ্গের দিকে

যখন কিডনির পাথর মূত্রনালীর দিকে নামতে থাকে, তখন ব্যথা ছড়িয়ে যায় কুঁচকি, মূত্রথলি বা যৌনাঙ্গের দিকে। এটি কিডনি স্টোনের একটি বড় লক্ষণ।

5️⃣ প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া

কিডনি ইনফেকশন বা মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI) থাকলে প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হয়। অনেক সময় প্রস্রাবে দুর্গন্ধ বা রঙ পরিবর্তনও দেখা যায়।

⚠️ কিডনির সমস্যার অন্যান্য লক্ষণ:

মুখ ও চোখের নিচে ফোলাভাব

হাতে-পায়ে পানি জমে থাকা

প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া

শরীরে ক্লান্তি বা দুর্বলতা

বমি বমি ভাব

🩹 করণীয়

কিডনির সমস্যা অবহেলা করা উচিত নয়। নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করুন, লবণ ও প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখুন, অতিরিক্ত ওষুধ (বিশেষ করে ব্যথানাশক) খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনে কিডনি ফাংশন টেস্ট করান।

👉 উপসংহার:
কিডনির ব্যথা সাধারণ পিঠ বা কোমরের ব্যথা থেকে আলাদা। তাই এ ধরনের ব্যথা অবহেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *